সকাল সকাল রাশেদ ভাইয়ের ফোন। আমি বেশ অবাক হলাম। এত সকালে উনি কেনো আমাকে কল দিবে? নিশ্চয়ই কোনো নারী কেস। আসলে নারী কেস না বলে কিশোরী কেস বলা উচিত। কারণ রাশেদ ভাই যাদেরকে বাসায় এনে কোচিং করায়, তারা সবাই স্কুলছাত্রী। এরমধ্যে তানজিনা নামে যে মেয়েটা আছে, মানিকনগর থাকে। আমি ওকে একবার অশ্রুটলোটলো চোখে কাঁদতে কাঁদতে সিড়ি বেয়ে নামতে দেখেছি। আমি ওকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, “তোমার কি হয়েসে? কাদসো কেনো? শরীর খারাপ? আমার বাসায় এসে একটু রেস্ট নেবে? ভয়ের কিছু নেই। ইউ ক্যান ট্রাস্ট মি”
সে আসেনি। আমার হাত ঝাড়া মেরে চলে গেছে হাহাহা। মানুষের উপকার করতে চাইলেও দোষ। এই দুনিয়ায় আসলে ভালোর দাম নেই…
যাই হোক, আমি রাশেদ ভাইর কল রিসিভ করলাম। রিসিভ করেই পার্ট নিলাম…
– এই কে? কাজের সময় ফোন দিচ্ছ কেনো? এত সকালে কেউ ফোন দেয়? আমি ঘুমাচ্ছিনা?
– নিপু ভাই, আমি রাশেদ। মিতালীর রাশেদ স্যার।
হাহাহা শালা আমার প্রতারণা বুঝতে পারেনি। আরে বেটা আমি তো ভং ধরসি ভং হাহাহা। এইটাই যদি না বুঝলি, তাইলে তুই কিসের শিক্ষক? হাহাহা…
… আমি ফোনালাপে মনযোগ দিলাম।
– ভাই আমার শ্বশুর আব্বাকে দেখছেন।
– জ্বি ভাই দেখছি। সেলিমের দোকান থেকে আপনার নামে নিয়মিত বাকি খাইতো।
– নিপু ভাই, মজা নিয়েন না। উনি আজকে মারা গেছে।
– আপনার ধারণা, এইটা রাষ্ট্রীয় চক্রান্ত?
– ভাই আমি বাড়ি যাচ্ছি। আমার ক্লাসটা আপনি নেন আজকে। আমি বলে রেখেছি।
– অবশ্যই নিবো
এখন ক্লাস নিচ্ছি। ছাত্ররা সমানে কথা বলছে, চিৎকার চেঁচামেচি করছে। দেখতে ভালোই লাগছে…
বুঝতে পারলাম, শিক্ষকদের জন্য সবচেয়ে কঠিন ব্যাপার হচ্ছে ছাত্রদের মন জয় করা। আজ নিজেকে সত্যিকারের একজন শিক্ষক মনে হচ্ছে। রাশেদ ভাইয়ের মত ছোটখাট কোনো শিক্ষক নয়, জাতির শিক্ষক…
… যাই, দেখে আসি ওয়াশরুমগুলোর কি অবস্থা 🙂