তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহীম ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লীগে খেলবেন না। তারা বিশ্বকাপ প্রন্তুতির জন্য ২০১৯ মৌসুমের ড্রাফট থেকে চিঠি দিয়ে আগেই নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। ইনজুরি ও আইপিএলের কারণে খেলার সম্ভাবনা নেই আরেক তারকা সাকিব আল হাসানের। তবে এরই মধ্যে মাশরাফি বিন মুর্তজাকে ড্রাফটের আগে দলে রেখে দিয়েছে আবাহনী। বাকি ছিলেন জাতীয় দলের আরেক তারকা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। আসরে সর্বোচ্চ মূল্যে (৩৫ লাখ) এবার তিনি খেলবেন শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের হয়ে। দেশের সেরা তরুণ পেস বোলার মোস্তাফিজুর রহমান ও ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকাকে দলে ভিড়িয়েছে শাইন পুকুর। ড্রাফটে সবার নজর ছিল মোহাম্মদ আশরাফুলের দিকে।
গেল বছর কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের হয়ে ৫ সেঞ্চুরি হাঁকানো আশরাফুল এবার খেলবেন দেশের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব মোহামেডানে। এই দলে আছেন আরেক তরুণ প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান লিটন কুমার দাসও। তিনি ছিলেন শেষ আসরের রান সংগ্রহের তালিকাতে শীর্ষে। গতকাল উত্তাপহীন লটারি পদ্ধতির এই দলবদল হয়েছে হোটেল সোনারগাঁওয়ে। ড্রাফট শেষে সিসিডিএমের চেয়ারম্যান কাজী এনাম আহমেদ বলেন, ‘এবার আমরা টি-টোয়েন্টি ফরমেট দিয়ে ঢাকা লীগ শুরু করবো। ২৫শে ফেব্রুয়ারি শুরু হবে টি-টোয়েন্টি লীগ। ফাইনাল হবে ৩রা মার্চ। এরপর একটু বিশ্রাম দিয়ে ৮ই মার্চ থেকে শুরু হবে ওয়ানডে ফরমেটে ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লীগ। আর রুদ্ধদ্বার ড্রাফট হওয়ার কারণ ছিল আমরা এই হোটেলে জায়গা পাইনি। পরে কিছুটা জায়গা ব্যবস্থা করা হয়েছে সংবাদ মাধ্যমের জন্য। এর পেছনে অন্য কোনো কারণ নেই।’
মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে শেখ জামাল দলে পেলেও তাকে মাঠে পেতে ক্লাবটির লম্বা অপেক্ষাই করতে হবে। নিউজিল্যান্ডে টেস্ট সিরিজ শেষ করে কিছুদিন বিশ্রাম নিয়েই তিনি মাঠে নামবেন। এ ছাড়াও শাইন পুকুরে আছেন দেশের আরেক প্রতিভাবান তরুণ ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকার। দেশের অন্যতম শক্তিশালী ক্লাব আবাহনী এবার ও তারকা সমৃদ্ধ দল। ড্রাফট থেকে তারা দলে ভিড়িয়েছে জাতীয় দলের পেসার রুবেল হোসেন, ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিঠুন, মেহেদী হাসান মিরাজ ও মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনকে। বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের হয়ে খেলা তরুণ লেগস্পিনার মিনহাজুল আবেদিনকে দলে নিয়েছে শেখ জামাল।
টি-টোয়েন্টি লীগে অংশ নিবে এই ১২টি ক্লাবই। মূলত ওয়ানডে ফরমেটের আগে ক্লাবগুলো দল অনেকটাই গুছিয়ে নিতে পারবে টি-টোয়েন্টি লীগেই। ৩টি করে দল মোট চার গ্রুপে ভাগ হয়ে লড়াই করবে। সেখান থেকে চারটি দল সেমিফাইনালে খেলবে। এই আসরের ফাইনালে ৩রা মার্চ মিরপুর শেরেবাংলা মাঠে মুখোমুখি হবে দুই দল। তবে এই লীগে খেলার জন্য আলাদা করে কোনো টাকা পাবে না ক্রিকেটাররা। এ ছাড়াও প্রতিবছরই ক্রিকেটারদের ক্লাবগুলোর কাছে পাওনা টাকা নিয়ে ধরনা দিতে হয়। এবারো তার ব্যতিক্রম হয়নি। ব্রাদার্স ও কলাবাগান তাদের ক্রিকেটারদের টাকা পরিশোধ করেনি সময়মতো। তবে লীগের নতুন মৌসুম শুরুর আগেই সমস্যার সমাধান হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিসিডিএম চেয়ারম্যান। সেই সঙ্গে ঠিকমতো ক্রিকেটারদের পাওনা পরিশোধ না করলে এবার থেকে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হবে ক্লাবগুলো বলেই নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘এটি খুবই দুঃখজনক যে কয়েকটি ক্লাব ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক পরিশোধ করেনি। দুটি ক্লাবের যে পাওনা ছিল তা এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। তবে আমরা এবার একটি নতুন নিয়ম করেছি ক্রিকেটারদের টাকা পাওয়া নিশ্চিত করার জন্য। আমরা সিসিডিএম এখন থেকে যে ক্লাব ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক দিবে না তাদের পয়েন্ট কেটে নিতে পারবো। সেই সঙ্গে আমাদের ক্ষমতা আছে আইন অনুসারে সেই ক্লাবকে নিষিদ্ধ করারও। এতে করে আশা করি এমন সমস্যা আর হবে না।’ প্রতিবছরই আম্পায়ারিং নিয়ে চলে নানা আলোচনা-সমালোচনা। তবে এবার শতভাগ স্বচ্ছতা থাকবে বলেই আশ্বাস দিয়েছেন সিসিডিএম চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘বোর্ড সভাপতি নির্দেশ দিয়েছেন যেন আম্পায়ারিংয়ে স্বচ্ছতা বজায় থাকে। আগের তুলনাতে গত বছর এমন অভিযোগ কমই এসেছে। আশা করি এবার আরো কমবে।
লীগের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত
* ২৫শে ফেব্রুয়ারি শুরু হবে টি-টোয়েন্টি লীগ, ফাইনাল ৩রা মার্চ।
* ৮ই মার্চ থেকে ওয়ানডে ফরমেটে লীগ শুরু।
* ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক সঠিকভাবে না দিলে ক্লাবের পয়েন্ট কেটে নেয়া ছাড়াও নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা থাকবে সিসিডিএমের।
* আম্পায়ারিংয়ের স্বচ্ছতার জন্য মাঠে ক্যামেরার ব্যবহার।
* প্রথম বিভাগের একজন ক্রিকেটার খেলতে পারবে প্রিমিয়ার লীগে।
* ক্রিকেটের পারিশ্রমিকের ট্যাক্স পরিশোধ করবে ক্লাব।
* ভেন্যু হবে ফতুল্লা খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম, বিকেএসপি ও মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম।